৮ বিভাগের খবরঅপরাধ

চট্টগ্রাম কাস্টমসে লুটেরা মারুফুরকে কে ধরবে!

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস এর লুটের মাষ্টার মারুফুরকে কে ধরবে! এই হাউসকে দূর্নীতির সুতিকাগার বানিয়েছেন যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ মারুফুর রহমান। তার অনিয়ম ও দূর্নীতি নির্বিঘ্ন করতে তৈরি করেছেন একাধিক সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেটের মাধ্যমেই তিনি আদায় করেন কোটি কোটি টাকা।

বিশেষ প্রতিনিধি: দেশের বৃহৎ রাজস্ব আদায়কারী সংস্থা চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস এর লুটের মাষ্টার মারুফুরকে কে ধরবে! এই হাউসকে দূর্নীতির সুতিকাগার বানিয়েছেন যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ মারুফুর রহমান। তার অনিয়ম ও দূর্নীতি নির্বিঘ্ন করতে তৈরি করেছেন একাধিক সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেটের মাধ্যমেই তিনি আদায় করেন কোটি কোটি টাকা। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)সহ বিভিন্ন সংস্থায় দেওয়া সব অভিযোগই তিনি অঙ্কুরেই বিনাশ করেন অদৃশ্য ক্ষমতাবলে।

কাস্টমসের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, মারুফুর রহমান চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসকে দুর্নীতির আঁখড়া বানিয়ে অঢেল অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, তার অধীনে চলা সিন্ডিকেটে রয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের একজন সহকারি কমিশনার, একজন রাজস্ব কর্মকর্তা ও তিনজন সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা। এ সিন্ডিকেট অধীনে মদ, সিগারেটের বিভিন্ন চালান প্রতি আদায় করেন ২-৪ কোটি টাকা ঘুষ। আরেকটি সিন্ডিকেটে রয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা নাজমুল হাসান এবং সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা মো নজরুল, রেজাউল এবং ‘ফালতু’ রাজু। এ সিন্ডিকেট প্রতি সপ্তাহে ১ কোটি টাকা ঘুষ সংগ্রহ করে মারুফকে দেন। তাছাড়া গ্রীণ চ্যানেল থেকে রাজু অবৈধ ফেব্রিক্স আমদানির চালান প্রতি ২ লাখ টাকা সংগ্রহ করে মারুফকে দেন। শুল্কায়ন গ্রুপের রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম সজিবের মাধ্যমেও প্রতি সপ্তাহে ঘুষের টাকা সংগ্রহ করেন। যা চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ওপনে সিক্রেট।

তাছাড়া অফডকে কর্মরত রাজস্ব কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেনের মাধ্যমে প্রত্যেকটি রফতানি চালান থেকে ১ লাখ টাকা ঘুষ নেন এ কর্মকর্তা। বন্দরে আসা সমুদ্রগামী জাহাজ বন্দর ত্যাগের আগে তিন সংস্থা থেকে ছাড়পত্র নিতে হয়। এ তিনটি সংস্থা হলো নৌবাণিজ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম বন্দর ও চট্টগ্রাম কাস্টমস। সমুদ্রগামী জাহাজের সব মাশুল পরিশোধ করা সংক্রান্ত নথিপত্র জমা দেওয়ার পর ছাড়পত্র দেয়া হয়। ছাড়পত্র পেতে দেরি হলে জাহাজগুলো বন্দর ত্যাগ করতে পারেনা। সময় মত ছাড়পত্র নিতে না পারলে বাড়তি মাশুল গুনতে হয়। এটাকে মোক্ষম সুযোগ হিসেবে নিয়ে ছাড়পত্র দিতে মোটা অংকের টাকা নেন মারুফুর রহমান। ঘুরে ফিরে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে পছন্দ করেন মারুফুর।

এক সময় এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের শ্যালক হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতেন। এ পরিচয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের চাপে রাখতেন। বর্তমানে এনবিআরের ২ জন মেম্বারের নাম ভাঙ্গিয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে দুর্নীতির মাফিয়া হয়ে উঠেন। তিনি বর্তমান এনবিআর চেয়ারম্যানের নিকট আত্মীয় বলেও সব জায়গাতে নিজেকে জাহির করেন। তার ব্যক্তিগত ২০১৮ এবং ২০২২ মডেলের ২টি প্রিমিও গাড়ি রয়েছে। আর নতুন করে তিনি একটি হ্যারিয়ার গাড়ি ক্রয় করেছেন। এ হ্যারিয়ার গাড়িতে করে উঠতি বয়সি নানা মডেলদের নিয়ে তিনি ঘুরে বেড়ান। মারুফুর রহমানের নারী ঘটিত কারণে তার প্রথম স্ত্রী ডিভোর্স দিয়ে চলে যান। তার বর্তমান স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে লন্ডনে বসবাস করেন। স্ত্রীকে লন্ডনে বাড়ি কিনে দিয়েছেন এবং সন্তানরা লন্ডনে পড়ালেখা করছে।

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button